তুলসী পাতার ০৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জেনে রাখুনঅতি প্রাচীনকাল থেকে তুলসী পাতা উপকারী সবার জানা। কিন্তু এই তুলসী পাতার
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকের অজানা। আমরা এই আর্টিকেলটিতে তুলসী পাতার
০৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরব। তুলসী পাতা খেলে কোন উপকারগুলো
পাওয়া যায় সেই সম্পর্কে তুলসী পাতার ০৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা
হবে।
তুলসী পাতায় রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান যা
দেহের মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। চলুন আর দেরি না করে
নিম্নে তুলসী পাতার ০৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন।
সর্দি কাশি এবং জ্বর নিরাময়ে
সর্দি কাশি ও জ্বর নিরাময়ে তুলসী পাতার গুরুত্ব অপরিসীম। তুলসী পাতা ও এলাচ
একসঙ্গে ফুটিয়ে পান করলে জ্বর কমে যায়। তাছাড়া কাশি নিরাময়ে তুলসী পাতার রসের
সাথে মধু একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে কাশি সেরে যায়। সর্দি কাশি ও জ্বর থেকে রক্ষা
পেতে হলে তুলসী পাতা উপকারী গুনাগুন অত্যন্ত প্রয়োজন। জ্বর ও সর্দি কাশি হলে
তুলসী পাতার রস খেতে পারেন।
চোখের সমস্যা দূর করে
চোখের সমস্যা দূর করতে তুলসী পাতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তুলসী পাতায়
রয়েছে ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা চোখের সমস্যা দূর করতে বেশ উপকারী। তাই চোখের
সমস্যা দূর করতে নিয়মিত তুলসী পাতার রস খেতে পারেন।
ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল রাখে
তুলসী পাতা থাকা এন্টিবায়োটিক উপাদান ত্বকের সংক্রামণ এবংপরিষ্কার রাখতে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এগুলো উপাদানের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া ও আর্থাসিস
দূর হয়।
গলা ব্যথা দূর করে
অনেকে রয়েছে গলা ব্যথায় ভুগছেন তাদের জন্য তুলসী পাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
একটি উপাদান। তাছাড়া শ্বাসকষ্ট সমস্যা কমাতে তুলসী পাতা অত্যন্ত উপকারী। কয়েকটি
তুলসী পাতা পানির সাথে ফুটিয়ে গড়গড় করলে গলা ব্যথা দ্রুত সেরে যায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
মানবদেহের জন্য ক্যান্সার একটি মারাত্মক মরণব্যাধি রোগ। এ রোগ দূর করতে তুলসী
পাতা অনেক উপকারী। তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান যার টিউমারের
কোষগুলোকে ধ্বংস করে ফেলে। এতে আরো রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল যেমন রোসমারিনিক এসিড,
লিউটিউলিন, মাইরেটিনাল এবং এপিজেনিন। এগুলো উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করতে
কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাছাড়া ব্রেস্ট ক্যান্সার দূর করতে সহায়তা করে থাকে।
ডায়াবেটিস দূর করে
তুলসী পাতায় রয়েছে ইনসুলিন উপাদান। প্রতিদিন নিয়মিত খাওয়ার আগে তুলসী পাতা
খেলে রক্তের সুগারের মাত্রা কমে যায়। তুলসী পাতায় অ্যান্টি ডায়াবেটিক ওষুধের
কাজ করে থাকে। তুলসী পাতাতে থাকা স্যাপোনিন ও ফ্ল্যাবোনয়েড ডায়াবেটিস রোধ করতে
কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
ওজন কমায়
তুলসী পাতা নিয়মিত খাওয়ার ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টেরল রোধ করে। তাই
অতি সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণ হয়ে যায়। তবে তুলসী পাতা দিয়ে তৈরি ক্যাপসুল
প্রতিদিন খাওয়ার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু যে কোন ওষুধ খাওয়ার আগে
অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
তুলসী পাতা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
অ্যাজমা, ফুসফুসের সমস্যা, জ্বর সর্দি কাশি ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
মোকাবেলায় কাজ করে থাকে। তাছাড়া ক্ষতস্থানে তুলসী পাতা বেটে লাগালে তার দ্রুত
শুকিয়ে যায়।
দাঁতের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে
তুলসী পাতার থাকা উপাদান যেমন মাইক্রোবিয়াল ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল যা দাঁত
পরিষ্কার ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তুলসী পাতা দিয়ে তৈরি টুথপেস্ট ব্যবহার
করলে দাঁতকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি দাঁতের দুর্গন্ধ মুক্ত রাখবে।
গর্ভস্থা ও স্তন্যপান
গর্ভস্থা ও স্তন্যপান করানোর সময় তুলসী পাতা না খাওয়া উত্তম। অতিরিক্ত তুলসী
পাতা খেলে এ সময় নানা রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে। এ সময় তুলসী পাতা খেলে ছোট
শিশুরা স্তন্যপান করতে পারেনা কেননা এর স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যায়। তাছাড়া
অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে নারীদের ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার হতে পারে।
রক্তপাতের সমস্যা হতে পারে
অতিরিক্ত তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে শরীরে রক্তের প্রভাব ও বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে
শরীরের স্বাভাবিক রক্ত জমাট হওয়ার প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়। এর কারণে দেখার
দিতে পারে অতিরিক্ত রক্ত পাতের সমস্যা। যেকোনো সার্জারির দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে
থেকে তুলসী পাতা খাওয়া বন্ধ রাখুন।
নিম্ন রক্তচাপ
তুলসী পাতায় থাকা উপাদানের মধ্যে একটি অতিরিক্ত পটাশিয়াম এর ফলে কমে যেতে পারে
রক্তচাপ। এমন কারোও নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা থাকলে তুলসী পাতা না খাওয়া উত্তম।
এগুলো সমস্যা না থাকলে তুলসী পাতা নিয়মিত খেলে অন্যান্য উপকারিতা পেয়ে থাকবেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন। এই
আর্টিকেলটিতে তুলসী পাতার ০৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে। এ
আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা তুলসী পাতার খাওয়ার উপকারি ও অপকারিতা সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। অতিরিক্ত কোন কিছু বেশি সেবন করলে তা ক্ষতির
লক্ষণ।
আরো পড়ুনঃ পাথরকুচি পাতার ১৬টি উপকারিতা ও অপকারিতা
এই আর্টিকেলটি পড়ে নিয়ম অনুসারে তুলসী পাতা খেলে আপনি উপকার পাবেন। অতএব তুলসী
পাতার ০৮টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে অন্যদের
মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এমন আরো আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত
ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url