হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জেনে রাখুন

আপনারা হাতিশুর গাছের নাম শুনেছেন, কিন্তু এই গাছের নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। তাই এই আর্টিকেলটিতে আপনাদের সুবিধার্থে হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। অতএব প্রিয় পাঠক আমাদের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন ও হাতিশুর গাছে শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখুন। 
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জেনে রাখুন
হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা জেনে রাখুন আপনার অনেক কাজে আসবে। কেননা হাতিশুর একটি ঔষধি গাছ, এই গাছ থেকে অনেক ওষুধি গুণ পাওয়া যায়। এই আর্টিকেলটিতে হাতিশুর গাছের ঔষধি গুন গুলো তুলে ধরা হলো।

ভূমিকা

হাতিশুর সাধারণত ঔষধি গুনসম্পন্ন একটি গাছ। এই গাছের পাতা ও মূল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। হাতিশুর গাছ বাড়ির আশেপাশে বা রাস্তার পাশে ও জমিতে এই গাছটি হতে দেখা যায়। এই গাছটি বিভিন্ন আগাছা জনিত জায়গায় জন্মে থাকে। বিশেষ করে বাড়ির আশেপাশে ও রাস্তার পাশে দেখা যায়। 
এই গাছের পাতাগুলো বাঁকানো দন্ডের হয়ে থাকে সাদা রঙের ফুল হয়ে থাকে। গাছের ফুল গুলো হাতির সুরের মত দেখায় এই জন্য এই গাছটিকে হাতিরশুর বলা হয়ে থাকে। গাছটি ১ থেকে ১.৫ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। হাতিশুর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Heliotropium indicum। এ ধরনের গাছগুলো কৃষি জমিতে বা জঙ্গলে কম পাওয়া যায়। 
প্রায় সময় এ ধরনের গাছ খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। হাতিশুর গাছের শিকড়ের অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে। আপনারা যদি হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে শিকড় খেয়ে থাকেন তাহলে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাবেন। হাতিশর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম জানার জন্য এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত সহকারে আলোচনা করব। হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আর্টিকেলটি করুন।

হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম

আপনারা অনেক হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। আপনাদের কথা চিন্তা করে আমরা এই আর্টিকেলটিতে হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার উপায় ও নিয়মাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা যদি নিয়ম মেনে হাতিশুর গাছের শিকড় খেয়ে থাকেন তাহলে ভালো উপকার পাবেন এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ নিরাময়ে করা যাবে। 

হাতিশুর গাছটি ঔষধি গুণ সম্পন্ন হওয়া বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চলুন আর দেরি না করে শিকড় খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নিই।
  • অনেকের টাইফয়েড জ্বর হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি হাতিশুর গাছের পাতা বেটে রস করে গরম করতে হবে এবং গরম করার পর ছেঁকে পানি দিয়ে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • এই হাতিশুর গাছের পাতা বেটে রস করে হালকা গরম করে শরীরের ফোড়া জায়গায় ব্যবহার করতে পারেন। শরীরের কোন জায়গায় ফোলা থাকলে হাতিশুর গাছের পাতার রস হারকা গরম করে ফোলা স্থানে ব্যবহার করতে হবে।
  • তাছাড়া আপনার শরীরের কোন স্থানে ব্যথা থাকলে সেই স্থানটিতে হাতিশুর গাছের পাতা বেটে রস করে ব্যথায় স্থানে ভালোভাবে মালিশ করবেন।
  • আপনার শরীরের কখনো যদি বিষাক্ত পোকামাকড় কামড় দিয়ে থাকে, তাহলে জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য হাতিশুর গাছের পাতার রস করে লাগালে জ্বালাপোড়া কমে যায়।
  • আপনি যদি হাতিশুর গাছের খাওয়ার নিয়ম অনুযায়ী সকালে এই গাছের পাতার রস ছেঁকে গরম করে খেতে পারেন।
আশা করছি প্রিয় পাঠকবৃন্দ আপনারা হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে গেছেন। এই শিকড় খাওয়ার জন্য অবশ্যই পাতাগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। তারপর পাতাগুলো বেটে রস করে গরম করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।

হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা - হাতির গাছের পাতার উপকারিতা

হাতিশুর গাছ আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই হাতিশুর গাছটি থেকে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। আপনারা অনেকে হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক। তাদের জন্য আমরা এই আর্টিকেলটিতে হাতিশুর গাছের উপকারিতা গুলো আলোচনা করব। চলুন হাতিশুর গাছের উপকারিতা গুলো জেনে নিই।
  • আপনার শরীরে কোন কারণে আঘাত লেগে ফোলে গেলে সেই স্থানে ফোলা কমাতে, হাতিশুর গাছের পাতার রস করে লাগাতে পারেন। এতে আপনার ফোলা কমে যাবে।
  • আপনার শরীরে ছত্রাক জনিত সংক্রমণ হয়ে থাকলে বা শরীরের লাল চাকা দাগ দেখা দিলে শিশুর গাছের শিকড়ের রস করে আক্রান্ত স্থানে লাগালে অনেকটা সংক্রমণ কমে যায়।
  • আপনার যদি জ্বর ও কাশি হয়ে থাকে তাহলে হাতিশুর গাছের শিকড়ের মূল পানির সাথে ফুটিয়ে সেই পানি খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
  • বিষাক্ত পোকামাকড় কামড় দিলে জ্বালাপোড়া কমাতে ক্ষতস্থানে হাতিশুর গাছের পাতা বেটে রস করে লাগাতে পারেন। তাহলে ক্ষতস্থানটি জ্বালাপোড়া থেকে ও ব্যথা পর্যন্ত দূর করে হয়ে যাবে।
  • যাদের কাশি অনেকটা বেশি হয়ে থাকে তারা হাতিশুর গাছের পাতা বেটে রস করে খেতে পারেন, এতে আপনার কাশি অনেকটা কমে যাবে।
  • এছাড়াও আপনার দাঁত ও মাড়ি ফোলে গেলে হাতিশুর গাছের শিকড়ের মূল চাবালে ব্যথা অনেকটা কমে যায় এবং দাঁতের মাড়ি ফোলা কমতে থাকে।
  • যাদের শরীরে একজিমা রোগ রয়েছে তারা এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে হাতিশুর গাছের পাতার রস করে খেলে একজিমা দূর করা যায়।
  • ঠান্ডার কারণে সর্দি লেগে থাকলে হাতিশুর গাছের পাতার রস খেলে সর্দি অনেকটা কমে যায়।
আশা করি আপনারা হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা ও হাতিশুর গাছের পাতার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়েছেন ।অবশ্যই এই উপকারিতা গুলো সঠিক নিয়ম মেনে হাতিশুর গাছের পাতাগুলো ব্যবহার করুন। তাহলে এই গাছের ঔষধি গুন গুলো পেয়ে থাকবেন।

হাতিশুর গাছের মূলের উপকারিতা

আপনারা উপরের অংশে হাতিশুর গাছের শিকড়ের উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছেন। আমরা এখন হাতিশুর গাছের মূলের উপকারিতা সম্পর্কে জানবো। হাতিশুর গাছের মূল বেটে রস করে খেলে সর্দি-কাশি দূর করা যায়। তাছাড়া টাইফয়েড রোগের জ্বর হয়ে থাকলে এই গাছের মূল খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। 

তাছাড়া শরীরের আঘাত লেগে থাকলে হাতিশুরের গাছ বেঁটে রস করে আঘাত স্থানে লাগাতে পারে। শরীরের কোন স্থানে পোকামাকড় কামড়ে যারা করলে সে স্থানে হাতিশুর গাছের মূল বেঁটে রস করে লাগালে জ্বালাপোড়া কমে যায়। তাছাড়া হাতিশুর গাছের অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে যা আপনারা উপরক্তে অংশে জেনে গেছেন।

হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়া

আপনারা যদি শরীরের যৌবন শক্তি বা সক্ষমতা বাড়াতে চান তাহলে হাতিশুর গাছের শিকড় খেতে পারেন। এজন্য আপনারা সকালে কিছু পরিমাণ হাতিশুর গাছের শিকড় তুলে ভালোভাবে ধুয়ে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে চিবিয়ে রস করে খেতে পারেন। খাওয়ার আগে একগ্লাস পানি অবশ্যই খেয়ে নিবেন। খাওয়ার পরেই হাতিশুর গাছের শিকড় খাবেন, মধু না থাকলে চিবিয়ে খেতে পারেন। হাতিশুর গাছের শিকড় অবশ্যই সকালে খালি পেটে খেতে হবে। তাহলেই আপনার যৌবন শক্তি বৃদ্ধি পাবে। আপনি যদি যৌবন শক্তি বৃদ্ধি করাতে চান সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন নিয়ম মেনে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন।

হাতিশুর গাছের অপকারিতা

আপনারা সবাই হাতিশুর গাছের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে গেছেন। এখন আপনাদের হাতিশুর গাছের অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা নিশ্চয় জানেন উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিতা রয়েছে। সঠিক নিয়ম না মেনে কোন কিছু গ্রহণ করলে তার অপকারিতার লক্ষ্য পেয়ে থাকবেন। তেমনটি হাতিশুর গাছের পাতা ও শিকড় নিয়ম মেনে ব্যবহার না করলে আপনারা অপকারিতার পেতে পারেন। 

এই হাতিশুর গাছটির বিভিন্ন ধরনের অপকারিতা রয়েছে। হাতিশুর গাছের পাতা অথবা শিকড় সকালে খালি পেটে খেতে হয়। আপনি যদি এই গাছের পাতা ও শিকড় ভরা পেটে খেয়ে থাকেন তাহলে অপকারিতা লক্ষ্য করতে পারবে। বিশেষ করে আপনার বমি বমি ভাব হতে পারে । তবে এই গাছটির তেমন কোন অপকারিতা পার্শ্ব প্রক্রিয়া তেমন বেশি লক্ষ্য করা যায় না। হাতিশুর গাছটি অপকারিতাতে চেয়ে উপকারিতায় বেশি। তাহলে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন হাতিশুর গাছের তেমন কোন অপকারিতা নেই।

সহবাসের আগে হাতিশুর গাছের শিকড় খান

হাতিশুর গাছ যৌন মিলনের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ঔষধি গাছ। হাতিশুর গাছের শিকড় যদি আপনি নিয়মিত প্রতিদিন সকাল বেলায় মধু দিয়ে ১ ইঞ্চি শিকড় খেতে পারেন তাহলে আপনার যৌন শক্তি ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তবে যদি সহবাসের কমপক্ষে ১৫ মিনিট আগে হাতিশুর গাছের শিকড় খেতে পারেন তাহলে আপনি অনেক উপকার পাবেন। বিশেষ করে মনে রাখবেন ১ ইঞ্চি শিকড়ের চেয়ে কখনো বেশি খাবেন না। যদি বেশি খেয়ে থাকেন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন এই জন্য হাতিশুর গাছের শিকড়ো ও পাতা খাওয়ার নিয়ম উপরোক্ত জানানো হয়েছে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করছি, আপনারা এতক্ষণ হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। তাছাড়াও হাতিশুর গাছের অপকারিতা সম্পর্কে জানানো হয়েছে। এই আর্টিকেলটি থেকে হাতিশুর গাছের শিকড় খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। এগুলো নিয়ম অনুসারে আপনারা হাতিশুর গাছের শিকড় ও পাতা ব্যবহার করে থাকবেন তাহলে এর উপকার পাবেন। 

এই আর্টিকেলটি পড়ে কোন প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আরো ঔষধি গাছ সম্পূর্ণ জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url