বাসক গাছের ১১টি ঔষধি গুণ
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহারপ্রাচীনকাল থেকে ঔষধি গাছ হিসেবে মানুষের রোগ নিরাময়ের ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায়
বাসক গাছের গুরুত্ব অপরিসীম। বাসক গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Justicia adhatoda। বাসক
গাছের ১১টি ঔষধি গুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। এই বাসক গাছের ঔষধ হিসেবে
পাতা বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে তাছাড়া বাকল, ফুল, মূলও ঔষধি গুণ সম্পন্ন।
চলুন আর দেরি না করে বাসক গাছের ১১টি ঔষধি গুন সম্পর্কে জানা যাক। বাসক গাছের
প্রতিটি অংশে মেডিসিনালি সক্রিয় বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। বাসক
গাছ অধিক শাখা-প্রশাখা যুক্ত এই উদ্ভিদ ৩ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে
শাখা-প্রশাখা গুলো বেশি শক্ত হয় না। পাতা লম্বা বড় ও ঘন সবুজ, গন্ধযুক্ত হয়ে
থাকে। নিম্নে বাসক গাছের ১১টি ঔষধি গুণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ভূমিকা
আমাদের দেশে অনেক জায়গায় বাসক গাছ দেখা যায় এমনকি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা
হচ্ছে। বাসক গাছের শুকনো পাতা বহু রোগে ওষুধি কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে, বৈজ্ঞানিক
পরীক্ষায় বাসক গাছের গুনাবলী প্রমাণিত হয়েছে। বাসক গাছ ভারত উপমহাদেশীয় উদ্ভিদ
এটি ভারতের উপমহাদেশের প্রায় সকল জায়গাতে দেখা যায়।
শরীরের বিভিন্ন রোগ ছাড়া পানির জীবাণু মুক্ত করতে ও বাসক পাতার গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখে। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ তৈরি করে সর্দি কাশি কমাতে বিশেষ
কার্যকরী অবদান রাখে। বাসক পাতা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি গুন
সম্পন্ন একটি গাছ যে গাছ মানবদের জন্য আদিকাল হতে ওষুধ হিসেবে ব্যবহারে আসছে।
নিম্নে বাসক গাছের ঔষধি গুণ সম্পর্কে তুলে ধরা হলো।
১. জ্বর হলে বাসক পাতার ব্যবহারঃ জ্বর হলে শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য
বাসক পাতা বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সকালে খালি পেটে বাসক পাতার রস
বানিয়ে খেতে পারলে জ্বর কমে যায়।
২. সর্দি কাশি সারেঃ সর্দি কাশি হলে বাসক পাতার রস খেতে পারলে সর্দি-কাশি
অনেকটাই আরাম পাওয়া যায়।
৩. উকুন নাশকঃ বাসক পাতার রস যদি গোসল করার কিছুক্ষণ আগে মাথায় দিয়ে
রাখি তারপর ভালোভাবে ধুয়ে নিই তাহলে উকুন কমে ও মারা যায়।
৪. প্রসাব জ্বালা-যন্ত্রনাঃ প্রসব করার সময় যদি কারও জ্বালা-যন্ত্রণা করে
থাকে তাহলে তারা বাসক গাছের ফুল বেটে মিছরি দিয়ে শরবত বানিয়ে খেলে এ রোগ থেকে
উপকার পাওয়া যাবে।
৫. বুকের কফ প্রতিরোধঃ অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে বুকে কফ জমে অথবা কাশি হয়,
কফ যদি না উঠে আসে সেক্ষেত্রে বাসক পাতার রস এক চামচ মধুসহ খেলে বুকে জমে থাকা কফ
গুলো সহজে উঠে আসবে।
৬. পাইরিয়া প্রতিরোধঃ পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে বাসক
পাতা পানিতে সিদ্ধ করে উষ্ণ অবস্থায় কুলকুচি করলে এ রোগের উপকার পাওয়া যায়।
৭. পানি বিশুদ্ধকরণঃ এক কলসি পানিতে তিন থেকে চারটি বাসক পাতা ফেলে দিলে
দুই থেকে তিন ঘন্টা পর ভিজিয়ে রাখার পর সেই পানি বিশুদ্ধ হয়ে যায় এরপর ব্যবহার
করতে পারেন।
৮. হাঁপানি প্রতিরোধঃ যাদের হাঁপানি টান রয়েছে তারা বাসক পাতা শুকনো করে,
ওই পাতা দিয়ে বিড়ি বা চিরকুটের মত পাকিয়ে তার সাহায্যে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট
প্রশামিত হয়।
৯. চুলকানি প্রতিরোধঃ বাসক গাছের ১০ থেকে ১২টি কচি পাতা ও এক টুকরা কাঁচা
হলুদের সঙ্গে বেঁটে চুলকানির জায়গায় লাগালে কিছুদিনের মধ্যে চুলকানি ভালো হয়ে
যায়।
১০. জন্ডিস প্রতিরোধেঃ যে সকল মানুষেরা জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন
তারা নিয়মিত বাসক পাতার ১ থেকে ২ কাপ রস খেলে এই জন্ডিস রোগ থেকে মুক্তি পাবেন।
১১. ফোঁড়ার ব্যথা নাশকঃ আমাদের অনেকের শরীরে ছোট ফোঁড়া অথবা ব্যথা দেখা
দিলে, বাসক পাতা ভালো করে বেঁটে ফোঁড়ার উপর লাগানো যায় তাহলে ব্যথা কমে যাবে।
লেখক মন্তব্য
প্রিয় পাঠকবৃন্দ আশা করছি, এই আর্টিকেলটিতে বাসক গাছের ১১টি ঔষধি গুণ সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এই বাসক পাতা আমাদের মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী
একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এই বাসক পাতা অতি প্রাচীনকাল হতে ব্যবহার হয়ে আসছে, তাছাড়া
এটা বিজ্ঞানী প্রমাণিত যে এই গাছটি থেকে অনেক ওষুধিগুণ পাওয়া যায়।
অতএব আপনারাও এগুলো রোগ থেকে মুক্তি পেতে বাসক পাতা ব্যবহার করতে পারে। বাসক
গাছের ১১টি ওষুধি গুণ সম্পর্কে আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার
করতে ভুলবেন না ও আর্টিকেলটি পড়ে কোন প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্টর মাধ্যমে জানাবেন।
আরো ঔষধি গাছ সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url