আলু চাষের উপযুক্ত সময়
মরিচ গাছ কোন মাটিতে ভালো হয়প্রিয় পাঠকবৃদ্ধ, সকলকে আমার ওয়েবসাইটে স্বাগতম। দৈনন্দিন জীবনে অন্যান্য সবজির
পাশাপাশি আলু আমরা খেয়ে থাকি, পুষ্টিগুণে রয়েছে ভরপুর। আমরা আলু চাষের উপযুক্ত
সময়, মাটি নির্বাচন ও আগম আলু চাষের সময় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি আলু
চাষের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। নিচে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
ভূমিকা
পৃথিবীর অনেক দেশে আলু প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমাদের দেশে প্রতিটি
তরকারিতে আলু ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এক কথায় ভাত ও গমের চেয়ে কোন অংশেই কম নয়।
আলুতে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে তাছাড়া চাল ও গমের চেয়ে অনেক বেশি আমিষ
রয়েছে। আলুতে রয়েছে আশঁ জাতীয় পদার্থের পরিমাণ বেশি, চর্বির পরিমাণ কম।
অন্যান্য সবজির চেয়ে বেশি পরিমাণ ভিটামিন ‘বি’ রয়েছে। আলু খেতেও অনেক
সুস্বাদুময় খাদ্য এটি সব ধরনের সবজির সাথে সংলগ্ন মিশ্রণে রান্না করে খাওয়া
যায়। আলু কমবেশি সব মানুষেরই প্রিয় একটি খাদ্য। আলুতে খাদ্যের আশঁ থাকায়
ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
আলুর জাতের নাম
আমাদের দেশে আলুর অনেক জাতের চাষ হয়ে থাকে এর মধ্যে যেগুলো বেশি চাষ করা হয়ে
থাকে, বারিআলু-৪ (ডায়মন্ট), বারিআলু-৮ (কার্ডিনাল), বারিআলু-১ (হীরা), বারিআলু-১৭
(রাজা), বারিআলু-১৫ (বিনেলা), বারিআলু-৪ (আইলসা) জাত রয়েছে। এ গুলো জাত বাংলাদেশ
কৃষি গবেষণ থেকে উদ্ভাবিত, এগুলো আলু সবই উচ্চ ফলনশীল জাত।
আলু চাষের পদ্ধতি
আমার দেশে সাধারণত ধান ও গমের পরে আলু একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। আমাদের দেশের
চাষীরা আলু চাষে অনেক আগ্রহী, কেননা আলু দৈনন্দিন জীবনে অনেক খাদ্যের চাহিদা
মিটিয়ে থাকে। নিচে আধুনিক পদ্ধতিতে আলু চাষ করার উপাদান নিয়ে আলোচনা করা হলো-
মাটি নির্বাচন
দেশের প্রায় যে কোন মাটিতেই আলু চাষ করা যায়। কিন্তু বেলে দোআঁশ মাটি আলু চাষের
জন্য অনেক বেশি উত্তম। এবং জমিতে পানি সেচ ও নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা আছে এমন জমি
নির্বাচন করতে হবে। জমিতে সঠিক পরিমাণে রৌদ্র উজ্জ্ব হতে হবে অবশ্যই কেনোনা ছাঁয়া
জমিতে আলু ভালো হয় না।
মাটিতে আড়াআড়ি ভাবে চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুর করে আলু লাগানোর জন্য প্রস্তুত
করতে হবে। মাটি কমপক্ষে চারটি চাষ দিলে ভালো হবে আর লক্ষ্য রাখতে হবে মাটির ঢেলা
না থাকে মাটি যেনো ঝুরঝুরে হয়। জমিতে সেচ প্রয়োগ করার জন্য জমির উপরিভাগ সমতল
রাখতে হবে।
আলু চাষের উপযুক্ত সময়
বাংলাদেশের বেশি ভাগ আলু চাষ হয়ে থাকে উওরাঞ্চলে, মধ্য-কাতির্ক (নভেম্বর প্রথম
সপ্তাহে) ও দক্ষিণাঞ্চলে অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহে থেকে দ্বিতয়ী সপ্তাহে (
নভেম্বর মাসের মধ্য থেকে শেষ সপ্তাহে) আলু লাগনো যায়। নভেম্বর মাসের শেষে আলু
লাগনো যায় না, পরে লাগলে আলুর ফলন ভালো হয় না।
আলু চাষে সারের পরিমান।
আলু চাষে ভালো ফলন পেতে হলে, সঠিক সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী সার প্রযোগ করতে হবে।এবং
সময় মতো পানি সেচ দিতে হবে। আলুর জমিতে তিন থেকে চার ধাপে সার প্রয়োগ করা হয়।
- (১) প্রথমতো আলু লাগানোর সময় জমিতে সারগুলো মিশাতে হয়, তারপর আলু রোপণ করতে হবে।
- (২)আলু রোপণের ২য় সেচ বা ৩য় সেচ দেওযার পরে আলুর জমির মাটি পুনরায় বেধেঁ দেওয়া হয়, তখন আবার ২য় ধাপে সার প্রয়োগ করতে হয়।
- (৩) আলুতে পানির সেচ দিলে ৩য় ধাপে সার প্রয়োগ করতে হবে।
আগাম আলু চাষের সময়
আমাদের দেশে চাহিদা অনুযায়ী আগাম আলু চাষ করা হয়ে থাকে, আগম আলু জাতের মধ্যে
অন্যতম অ্যাস্টেরিক, ষাট্রে ও কার্টিনাল আলু চাষ করা হয়। আলু রোপণের ৫৫ থেকে ৬০
দিনের মধ্যে তুলার সময় হয়ে যায়। আগাম আলুতে খরচ তুলনামূলক কম হয়ে থাকে এবং অধিক
দাম থাকায় লাভবান হওয়া যায়। আলুতে সঠিক ভাবে যত্ন নিলে লোকসান হওয়ার হবার
সম্ভাবনা থাকে না।
আলু চাষে কি কি সার দিতে হয়?
আলুর জমি চাষ করার সময় জৈব সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। আলু রোপন করার সময় প্রতি একর
জমিতে টিএসপি ৪০ কেজি, ডিএপি ৬০ কেজি, জিপসাম ৪০ কেজি, বোরণ ৪ কেজি ও জিংক সালফেট
৩ কেজি দিতে হয়। এ গুলো সার সম্পূর্ণ মিশিয়ে আলু রোপণের নালা দিয়ে দিতে হয়, এবং
মিশিয়ে দিতে হবে। না হলে আলু পচাঁর সম্ভাবনা থাকে।
আলুর গাছের গড়ায় মাটি দিয়ের সময় আবার সার প্রয়োগ করতে হবে। টিএসপি ৩৫ কেজি, ডিএপি
৩০ কেজি, জিংক সালফেট ২ কেজি । সেচ সময় ইউরিয়া সার ২৫ কেজি দিতে হয়। তাছড়া
প্রয়োজন অনুযায়ী সার প্রয়োগ করা উওম।
লেখকের মন্তব্য
আলু চাষের উপযুক্ত সময় ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হল এগুলো সম্পর্কে জানতে
পেরেছেন। এ বিষয় গুলো নিয়ে কোনো কিছু জানা বা মতামত থাকলে, অবশই আমদের কমেন্টের
মাধ্যমে জানাতে পারেন। আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লাগলে শেযার ও কমেন্টে করতে ভুলবেন
না। মরিচ গাছে কোন মাটিতে ভালো হয় নিয়ে আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট
করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url