মরিচ গাছ কোন মাটিতে ভালো হয়
আলু চাষের উপযুক্ত সময়মরিচ বা লঙ্কা নামে আমাদের দেশে পরিচিত। মরিচ এক প্রকার ফল যা মসলা হিসেবে
রান্নায় ঝাল স্বাদের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে পৃথিবীর সর্বত্র মরিচ
রান্নার ঔষধি হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মরিচে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন ও
ফসফরাস রয়েছে। তাছাড়া শুকনা মরিচ চাটনি, আচার, ভর্তায় মশলা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ
উপাদান।
আজকের আর্টিকেলতে আমরা মরিচ গাছ কোন মাটিতে ভালো হয় এবং রোপনের পদ্ধতি ও মরিচের
বৈশিষ্ট্য গুলো নিয়ে নিচে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করবো। প্রিয় পাঠকগণ আপনারা
প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন, আশা করি আপনার মরিচ গাছ কোন মাটিতে
ভালো হয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন।
বিশ্বের সবচেয়ে দামি মরিচ কোনটি?
বিশ্বের সবচেয়ে দাবি সুগন্ধি মরিচ এর নাম ‘চারাপিতা’। এই দামী মরিচ পাওয়া যায়
দক্ষিণ আমেরিকার পেরুতে চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। এই সুগন্ধি মরিচ আরব দেশের
রাজা-বাদশাহদের খাবারে ব্যবহার করা হতো। মক্কার বড় বড় রেস্টুরেন্টে এই সুগন্ধি
মরিচ খাবারে ব্যবহার করে। এই মরিচ দেখতে সবুজ থেকে হলুদ বর্ণে হয়ে থাকে।
মরিচ কত প্রকার ও কি কি?
মরিচ সাধারণত দুই প্রকার- ঝাল মরিচ ও মিষ্টি মরিচ। মরিচ তরকারি সুস্বাদু করার
অন্যতম একটি প্রধান উপাদান। ঝাল মরিচের উন্নত জাত যেমন-
- বারি মরিচ-১ ( সারা বছর চাষ করা যায়)
- বারি মরিচ-২ ( গ্রীষ্মকালীন সময় চাষ করা যায়)
- বারি মরিচ-৩ ( শীতকালে চাষ উপযোগী)
এছাড়া ডেমন, চন্দ্রমুখী, সনিক, বাইন, সিটিন, সূর্যমুখী, ওয়ান্ডার বেল, হট
মাস্টার প্রভৃতি জাত রয়েছে।
মরিচ গাছ কোন মাটিতে ভালো হয়
বেলে দো-আঁশ মাটিতে মরিচ চাষ করা উপযুক্ত। পানি নিষ্কাশন সুবিধা থাকতে হবে, এবং
জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দো-আঁশ মাটিতে মরিচ চাষাবাদের জন্য উত্তম হবে। বন্যায় পানি
ওঠা এমন উঁচু জমি যেখানে ভাদ্র অর্থাৎ আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসে জো অবস্থা আসে
সেখানে মরিচ চাষাবাদ ভালো হয়। ছায়া মুক্ত জমি মরিচ গাছ চাষাবাদের জন্য উপযোগী।
বিশেষ করে সেচ ব্যবস্থা থাকতে হবে।
মরিচ গাছে সার দেওয়ার নিয়ম
মরিচ গাছে শতক প্রতি সার দেওয়ার নিয়ম- জিপসাম, গোবর, টিএসপি, বোরন ও এমওপি ৫০
কেজি সার ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে জমি চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। এবং ২৫, ৫০ এবং
৭৫ দিন পর ইউরিয়া ও এমওপি সমান প্রয়োগ করতে হবে। সেচের আগে মরিচ গাছের গোঁড়া থেকে
১০-১৫ সেমি আশে পাশে নিড়ানি দিয়ে এমওপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ
আধুনিক পদ্ধতি যে সকল ফসল চাষাবাদ করে তাকে মালচিং পদ্ধতি বলে। মালচিং পদ্ধতি
ব্যবহার করে চাষাবাদ করলে কম খরচে অধিক ফসল পাওয়া যায়। নিম্নে আলোচনা করা হল-
- জমিকে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে বেড তৈরি করতে হবে।
- মালচিং পেপার বেডের ওপর বিছিয়ে সেখানে চারা রোপণের জন্য নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর ছিদ্র করতে হবে।
- সার ও সেচের পানি অপচয় কম হয়।
- জমিতে আগাছা হতে পারে না, পরিষ্কার-পরিচ্ছন থাকে। এবং ফসলে রোগবালাই কম হয়।
- চাষাবাদে শ্রমিক কম লাগে, চাষাবাদে খরচ কম হয়।
- অতিরিক্তি বৃষ্টি ও সেচ এর ফলে ফসল নষ্ট হয় না।
- গাছ দীর্ঘ দিন থাকে ও ফলন অনেক ভালো হয়।
- এই মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষাবাদে কৃষক অনেক লাভবান হয়ে থাকে।
লেখকের মন্তব্য
বর্তমানে আমাদের দেশে সহ অন্যান্য দেশগুলোতে মরিচ ব্যবহার হয়ে থাকে। তরকারি
রান্নায় বিশেষ মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। মরিচ গাছ কোন মাটিতে ভালো হয় এবং
মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ। সম্পর্কে জানতে পেরেছেন, এ বিষয় গুলো নিয়ে কোনো প্রশ্ন
বা মতামত থাকলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আমাদের আর্টিকেলটি
আপনার ভালো লাগলে শেয়ার ও কমেন্টে করতে ভুলবেন না। অন্যান্য বিষয় নিয়ে আর্টিকেল
পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url