সাজনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
ডাবের উপকারিতা ও অপকারিতাপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, সকলকে আমার ওয়েবসাইটে স্বাগতম। দৈনন্দিন জীবনে মানব দেহের জন্য
আমাদের পুষ্টিকর খাদ্য প্রয়োজন রয়েছে এবং ঔষুধি হিসেবে ব্যবহার হয় থাকে সাজনা
পাতা। সাজন পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে অনেকের জানা
নাই।
অতএব পাঠকবৃন্দ আমাদের আর্টিকেলটিতে সাজনা পাতার খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ম
গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হল।
সজিনা পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম
সজিনা পাতা পাউডার বা Moringa Power স্বাস্থ্যের জন্য একটি পুষ্টিকর খাদ্য
উপাদান। একে বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। সজিনা পাতার গুঁড়ো
খাওয়ার একাধিক নিয়ম গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো-
ভাতের সাথে
আমাদের বাঙ্গালীদের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ভাত, আমরা বাঙালিরা সবাই ভাত খেতে পছন্দ
করি। এছাড়া সজনে পাতার গুঁড়ো বিভিন্ন খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। গরম
ভাতের সাথে সজনে পাতার গুঁড়া মেশানো অথবা তরকারি সাথে মিশেয়ে খেলে অনেক
পুষ্টিগুণে ভরপুর হয় তেমন স্বাদে সুস্বাদু হয়ে থাকে।
চায়ের সাথে মিশিয়ে
সজনে পাতা খাওয়ার সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে চায়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়া। কেননা
চায়ের সাথে মরিঙ্গা গুঁড়া মেশানো হলে, চায়ের পানির সাথে সব পুষ্টিগুণ মিশে যায়।
তখন সেই চা খাওয়া হলে দেহের জন্য অনেক উপকারে কাজে লাগে।
মশলার সাথে মিশিয়ে
তরকারি রান্না করার সময়, মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহারের ভালো একটি অপশন হতে পারে। একে
যেকোনো তরকারির ঝোল, ভাজি ইত্যাদির সাথে মশলা হিসেবে ব্যবহার করে খাওয়া যেতে
পারে।
শরবতের সাথে মিশিয়ে
সজনে পাতার গুঁড়ার সাথে গুঁড় বা চিনি ও লেবুর রস মিশিয়ে শরবত তৈরি করে খাওয়া যায়।
এ শরবত নিয়মিত খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও শরীর ওজন নিয়ন্ত্রণ
রাখে।
স্যুপের সাথে
মরিঙ্গা পাউডার স্যুপের সাথে বিভিন্ন উপাদান যোগ করে এর পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করা
হয়। এ ভাবে স্যুপের সাথে মরিঙ্গা পাউডার গ্রহণ করা একটি উপকারি পদ্ধতি। এতে
স্যুপের স্বাদ বৃদ্ধি পায় তেমনটা পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পাই।
পানিতে মিশিয়ে
মরিঙ্গা পাউডার পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এক গ্লাস নরমাল পানির সাথে ১
থেকে ২ চামচ মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে খাওয়া যায়। এভাবে খেলেও পুষ্টিগুণ পাওয়া
যায়।
সজনে পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
সজনে পাতার গুনের কথা বলে শেষ করা যাবে না, বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকাতে একে
পাওয়া যায়। দেশ-বিদেশি পুষ্টিবিদরা সাজনা গাছকে অলৌকিক গাছ বলে অভিহিত করেছেন।
সজনে পাতার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানলে অবাক হয়ে যাবেন। প্রতিগ্রাম সজনে পাতায়-
- ১) কমলার চেয়ে ৭ সাত গুণ বেশি ভিটামিন সি।
- ২) গাজরের চেয়ে ৪ চার গুণ ভিটামিন এ বেশি।
- ৩) দুধের চেয়ে ৪ গুণ ক্যালসিয়াম বেশি।
- ৪) কলার চেয়ে ৩ গুণ পটাশিয়াম বেশি।
নিচে সজনে পাতার উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করা হলো---
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
সজনে পাতায় শরীরে শর্করার মাত্রা বাড়তে না দেওয়ার ফলে, ডায়বেটিস রোগীরা
নিয়মিত সজনে পাতা খেলে শরীরের চিনির পরিমাণ থাকবে না এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত
হয়ে যাবে।
ওজন কমানো
শরীরের অতিরিক্ত মেদ ও চর্বি ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তাহলে নিয়মিত সজনে
পাতার রস অথবা গুড়ো খেলে এগুলো কমানো সম্ভব। কেননা সজনে পাতার গুড়ো কোলেস্টেরল
দূর করতে সাহায্য করে।
রক্তশূন্যতা
সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে জিংক এবং আয়রন থাকায় এটি শরীরের জন্য রক্তশূন্যতা
দূর করতে সাহায্য করে। সজনে পাতা নিয়মিত সেবন করলে শরীরের রক্তশূন্যতা সহ আয়রন
ঘাটতি জনিত বিভিন্ন সমস্যাগুলো থেকে মুক্ত রাখতে পারবে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
সজনে পাতার ঔষধি গুনগুলো আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ
ভূমিকা পালন করে থাকে।
হাড় মজবুত করে
সজনে পাতায় ক্যালসিয়াম থাকায় এটি দেহের হাড় গঠনের জন্য ও মজবুত করার অত্যন্ত
কার্যকরী। নিয়মিত সজনে পাতা খেলে এর ভিতরে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম হাড়
গঠন ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।
যৌন ক্ষমতা
সজেন পাতায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর থাকায়। এটি পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি
করতে সাহায্য করে।
তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় সজনে পাতা রাখা হলে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে।
অপকারিতা
সজনে পাতার অনেক উপকারিতা রয়েছে তেমনটা এটি অতিরিক্ত গ্রহণ করলেও এর ফলে সৃষ্টি
হতে পারে বিভিন্ন সমস্যা। সজনে পাতা নিয়মিত খাওয়া হলে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে
পারে, তাছাড়া বমি বমি ভাব, পেটের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
সজনে পাতা গর্ভবতী মহিলাদের ও শিশুদের না খাওয়া উত্তম। কেনো না সজনে পাতায়
প্ল্যান্ট ক্যামিকেল এর উপস্থিতি রয়েছে। তাই সজনে পাতা শিশু ও গর্ভবতীর গ্রহন না
করায় উচিত।
লেখকের মন্তব্য
বাংলাদেশ সহ অন্যান্য দেশ গুলোতে সাজনা পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে জানা
প্রয়োজন। কেননা সাজন পাতা আমাদের জন্য উপকারি, অনেক ঔষুধিগুন রযেছে। এবং কী ভাবে
খাওয়া যায় তা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এ বিষয় নিয়ে কোনো ধরনের প্রশ্ন বা মতামত
থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আর্টিকেলটি পড়ে ভালো বা উপকৃত হলে শেয়ার ও
কমেন্টে করতে ভুলবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url